১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে জেনারেল নিয়াজী তার কুখ্যাত মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী এবং তাদের প্রধান সাহায্যকারী মেজর সিদ্দিক সালিক আল-বদর বাহিনীর একজন কমান্ডার আশরাফুজ্জামান খানের কাছ থেকে বাঙালি বুদ্ধিজীবিদের একটা তালিকা পায়। পরিকল্পনা ছিল এই বুদ্ধুজীবিদেরকে শীঘ্রই হত্যা করা যাতে করে, যদি বাংলাদেশ স্বাধীন হয় তবে
আরো পড়ুন»

আশরাফুজ্জামান খান
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে জেনারেল নিয়াজী তার কুখ্যাত মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী এবং তাদের প্রধান সাহায্যকারী মেজর সিদ্দিক সালিক আল-বদর বাহিনীর একজন কমান্ডার আশরাফুজ্জামান খানের কাছ থেকে বাঙালি বুদ্ধিজীবিদের একটা তালিকা পায়। পরিকল্পনা ছিল এই বুদ্ধুজীবিদেরকে শীঘ্রই হত্যা করা যাতে করে, যদি বাংলাদেশ স্বাধীন হয় তবে যেন ধ্বংস প্রাপ্ত জাতিটির কাঠামো পুনর্গঠন করার মতো কেউ না থাকে। এসমস্ত শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবিদের অবদান ছাড়া বাংলাদেশ অতি অল্প সময়েই ভেঙে পড়বে।পাক সেনাবাহিনীর দুইজন কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার কাশেম এবং ক্যাপ্টেন কাইয়ুম বুদ্ধিজীবিদের হত্যাকান্ড তদারক করত।
মুক্তিযুদ্ধের পর আশরাফুজ্জামানের ব্যক্তিগত ডায়েরী ৩৫০ নাখালপাড়াস্থ বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়। ডায়েরীর দুই পাতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯জন শিক্ষকের নাম তাদের বাসার ঠিকানাসহ দেওয়া ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অফিসার মুহাম্মদ মরতুজার নামও এই ডায়রীতে ছিল। এই ২০জন ব্যক্তির মধ্যে ১৪ই ডিসেম্বর ৮জন নিখোঁজ হন: মুনির চৌধুরী (বাংলা), ড: আবুল খায়ের ( ইতিহাস ), গিয়াসউদ্দিন আহমেদ ( ইতিহাস ), রাশেদুল হাসান ( ইংরেজি ), ড: ফয়জুল মহি ( আই. ই. আর ), ড: মুনাজ ( মেডিকেল অফিসের )। ডায়েরীর আরেকটি পাতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬জন শিক্ষকের নাম ছিল।এছাড়াও বুদ্ধিজীবি হত্যা অপারেশনের প্রধান ব্যক্তি চৌধুরী মঈনউদ্দিন, কেন্দ্রীয় আল-বদর শাখার একজন সদস্য শওকত ইমরান এবং ঢাকা বদর বাহিনীর প্রধানের নামও ডায়েরীতে ছিল।
মফিজুদ্দিনের ( লাশবাহী গাড়ির চালক ) স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায়, আশরাফুজ্জামান এসব মানুষদের নিজ হাতে গুলি করে হত্যা করে। মফিজুদ্দিনের স্বীকারোক্তির কারণে এই সমস্ত শিক্ষকদের ছিন্ন ভিন্ন শরীর রায়েরবাজার জলাভূমি এবং মিরপুরের শিয়াল বাড়ি গণকবর থেকে উদ্ধার করা হয়।